লোহাগড়ায় দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশ সদস্য আহত, মামলা দায়ের
কাজী ইমরান, নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের লোহাগড়ার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের ঝিকড়া বাজারে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে লোহাগড়া থানার মুন্না হোসেন(২৫) নামে একজন পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি (পিক্যাপ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় দু’জন গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, আমাদা গ্রামের আক্তার হোসেন ও ঝিকড়া গ্রামের রাজীব হোসেন।সোমবার (১৯ জুন) রাত ৯টার দিকে লক্ষীপাশা ইউনিয়নের ঝিকড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় আমাদা গ্রামের আক্তার খানের মেয়ে বিথী খানম ও ছেলে নয়ন খান পার্শ্ববর্তী ঝিকড়া বাজারে মাছ কেনার জন্য যান। তিনি ১৬০ টাকা দিয়ে কিছু মাছ কেনেন। তবে ওই বিক্রেতা একই ধরনের মাছ কিছুক্ষণ আগে অন্য ক্রেতাদের কাছে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন ওই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা লক্ষীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার (ইউপি সদস্য) ঝিকড়া গ্রামের কামাল শেখের ছোট ভাই সজিব শেখ। এ নিয়ে সজিব শেখ ওই মাছ বিক্রেতা ও ক্রেতা বিথীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে তিনি নারী ক্রেতাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন।
এ ঘটনায় বিথী বাড়ি ফিরে এসে তার বাবা আক্তার খানসহ স্বজনদের জানান। পরে স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল ঝিকড়া বাজারে হামলা করার উদ্দেশে রওনা হন। আর সম্ভাব্য হামলার তথ্য পাওয়ায় ইউপি সদস্য কামাল তার লোকজন নিয়ে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় দুই গ্রামের লোকজন মুখোমুখি অবস্থানে এলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করেন ও উভয় পক্ষই ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। তাদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের গাড়ির কেবিন গ্লাস, লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। এছাড়া পুলিশ সদস্য মুন্না আহত হন।
ওসি মো. নাসির উদ্দীন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় লোহাগড়া থানার এস আই বাচ্চু শেখ বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে অজ্ঞাত ৮০/৯০ জন দুই গ্রামবাসীর নামে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে।