এম এ সাইদ (তন্ময়)
বাংলাদেশের নানান অঞ্চলে এই নামে মেলা বসে! আপনি জানেন কি আমাদের দেশে বউ মেলা হয়? ভাবছেন, এ আবার কেমন মেলা! এই মেলায় বৌ বিক্রী হয় নাকি! না বৌ বিকিকিনির মেলা নয় এটা। ঘরের লক্ষী আমাদের কাছে আদরণীয়, সে বিক্রীর বস্তু নয়! তবু কেন এমন নাম? আসুন, জেনে নিই-
জয়রামপুরের বউ মেলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার একটি গ্রাম হলো জয়রামপুর। এখানে মেলার আয়োজন করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা। শত বছরের পুরোনো বটগাছের নিচে বসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি। এটি আদ্যোপান্ত নারীদের মেলা।
নববধূ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারীরা জমায়েত হন সেই বট গাছের ছায়ায়। এখানে এসে তারা মিটিয়ে ফেলেন পুরোনো বছরের সব ঝগড়া-বিবাদ। একজন বাঙালী নারী যাতে ঝগড়া বিবাদ ভুলে নতুন বছরে স্বামীর সংসারকে ধনসম্পদে ভরিয়ে তুলতে পারেন সে উদ্দেশ্যেই এত কান্ড।
তাড়াশের বউ মেলা
এই বৌ মেলাটি মূলত ওরশের মেলা। সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরের মিলনস্থল তাড়াশের নওগাঁর শাহ শরিফ জিন্দানী (রাঃ) এর মাজারে তিন দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরশ হয়। শেষের দিন বসে মেলা। এই মেলাকে স্থানীয়রা বলেন বউ মেলা। কারণ বউ-শাশুড়িরা ঘর গৃহাস্থলির জিনিসসহ নানান জিনিস কেনাকাটা করেন এখানে। বেশিরভাগই থাকে নারীদের পণ্য। তাদের ব্যবহার্য প্রসাধনী, টুকটাক সখের জিনিস পাওয়া যায় এখানে।
তবে মেলাটিকে ‘জামাই-বউ মেলাও বলে অনেকে। মেলার নাম যাই হোক যেতে বাঁধা নেই কারোই। সব বয়সের সব ধর্মের মানুষের আনাগোণায় মুখর থাকে মেলা প্রাঙ্গন।
নাটোরের বউ মেলা
নাটোরের সিংড়ার বিয়াস গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলাটি। প্রতিবছর বিয়াশ কালিমাতার মেলার পরদিন একই স্থানে এই মেলা বসে। শুধু নারীরাই এখানে কেনাকাটা করতে পারেন। পুরুষদের প্রবেশ একদম নিষেধ!
বগুড়ার বউ মেলা
বগুড়ায় ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলার পর শুরু হয় এই মেলা। এখানকার রীতিও ওই, শুধু নারীরা থাকবেন মেলায়। নারীদের স্বচ্ছন্দ্য কেনাকাটা, বাইরের পুরুষদের দ্বারা কোন অপ্রীতিকর ঘটনার মাঝে না পড়ার প্রয়োজনে এমন আলাদা মেলার আয়োজন করা হয় বলে অনেকের ধারণা।