লিটনকে ফিরিয়ে কুমিল্লার জয়রথ থামালেন তানজিম সাকিব
স্বদেশ বাংলা ডেস্কঃ
এই ভালো, এই খারাপ-লিটন দাসের ক্রিকেট ক্যারিয়ারও যে এমনই। বাদ যাচ্ছে না এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে তাঁর ক্যারিয়ারও। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে আজ তিনি আর আন্দ্রে রাসেল মিলে কুমিল্লাকে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন। তবে তানজিম সাকিব শেষ পর্যন্ত তা হতে দেননি। ১২ রানে হেরে টানা পাচ ম্যাচ জয়ের পর অবশেষে জয়রথ থামল কুমিল্লার।
১৭৮ রানের লক্ষ্যে নেমে দলীয় ১৬ রানেই ভেঙে যায় কুমিল্লার উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে সামিত প্যাটেলকে তুলে মারতে যান ইমরুল কায়েস। এজ হওয়া বল মিড অফে ধরেছেন কেনার লুইস। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন তাওহীদ হৃদয়। দারুণ শুরুর আভাস দিয়েও স্কোর বড় করতে পারেননি হৃদয়। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে তানজিম হাসান সাকিবকে উড়িয়ে মারতে যান হৃদয়। মিড অফ থেকে উল্টো দিকে দৌড়ে ক্যাচ ধরেন আরিফুল হক। ১৫ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৭ রান করেন হৃদয়। প্রথম ৬ ওভার শেষে কুমিল্লা করে ২ উইকেটে ৩৯ রান।
দুই সতীর্থের আসা-যাওয়া দেখেছেন ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করা লিটন। ১৬ বলে ১৩ রান করে রয়েসয়ে শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে পড়তে পারত আরেক উইকেট। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে জনসন চার্লসের বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদন করেন সাঞ্জামুল ইসলাম। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ করেন চার্লস। রিভিউতে এজ দেখা দিলে বেঁচে যান চার্লস। সতীর্থের বেঁচে যাওয়া আরও বেশি অনুপ্রাণিত করেছে লিটনকে। দশম ওভার বোলিংয়ে আসা আরিফুলের ওভার থেকে একাই ২২ রান নেন লিটন। সেই ওভারে লিটন মেরেছেন ১ ছক্কা ও ৩ চার। ঠিক তার পরের ওভারে ফিফটি ত নিয়েছেন তিনি। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিতে লেগেছে ৩৬ বল। সময় যত গড়িয়েছে, লিটন তত চড়াও হয়ে খেলেছেন।
১৪তম ওভার বোলিংয়ে আসা তানজিম সাকিবের ওভার থেকে কুমিল্লা নেয় ১৩ রান। এই ওভারে লিটন একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন। ফিল্ডিংয়ে একই সঙ্গে ভুলও করতে থাকে সিলেট। ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে বেনি হাওয়েলকে কাট করতে যান চার্লস। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা সাঞ্জামুল সহজতম ক্যাচ ছেড়েছেন। জীবন পাওয়ার পর বেশিক্ষণ অবশ্য টিকতে পারেননি তিনি। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে চার্লসকে ফেরান শফিকুল ইসলাম। টি-টোয়েন্টির এই ম্যাচে চার্লস ২১ বলে ১২ রান করেন। তাে কুমিল্লার স্কোর হয়ে যায় ১৫.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১১৮ রান। তৃতীয় উইকেটে লিটন- ন- চার্লসের জুটি ছিল ৫৬ বলে ৭৯ রানের। ৩ উইকেটে পড়ার পর পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে উইকেটে পড়ার পর পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন মঈন আলী। তবে তিনি ৫ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে মঈনকে বোল্ড করেন বেনি হাওয়েল।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লার স্কোর হয়ে যায় ১৬.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৭ রান। ছয় নম্বরে তখন ব্যাটিংয়ে নামেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ ২০ বলে ৫১ রানের সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করেন রাসেল ও লিটন। যেখানে শেষ ওভারে দরকার হয় ২৫ রানের। কঠিন হলেও তা টি-টোয়েন্টির যুগে একেবারে অসম্ভব না। যেখানে লিটন দারুণ ছন্দে ব্যাটিং করেন এই ম্যাচে আর রাসেল তো বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত। তবে শেষ ওভারের প্রথম বলে লিটনকে বোল্ড করে কুমিল্লার জয়ের আশা অনেকটাই শেষ করে দেন তানজিম সাকিব। ৫৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় লিটন করেন ৮ রান। এটাই কুমিল্লার ইনিংসের সর্বোচ্চ রানু। Share কুমিল্লা শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৫ রানে আটকে যায়। সিলেটের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব। যেখানে শেষ ওভারে লিটনের পাশাপাশি নেন রাসেলের উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন হাওয়েল। ৩১ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন। একই সঙ্গে ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচ করে নেন ১ উইকেট। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৭ রান করে সিলেট। ইনিংস সর্বোচ্চ ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন বেনি হাওয়েল। ৩১ বলে ৬ চার ও ছক্কা মারেন ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। কুমিলার বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন ও সুনীল নারাইন। যার মধ্যে নারাইন ৪ ওভার বোলিং ক্যারিযার মধ্যে নারাইন ৪ ওভার বোলিং করে খরচ করেন ১৬ রান। এক ওভার মেইডেনও দিয়েছেন তিনি।