নিজস্ব প্রতিবেদনঃ
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ এর আহ্বানে জাতীয় জাদুঘরের সামনে (শাহবাগ চত্ত্বরে) প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিও ভূক্তির লক্ষ্যে এই অবস্থান কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, এই অটিষ্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তির জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ১৮/১২/২০১৯ সালে এই বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিও ভূক্তির জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারী করে। এছাড়া ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা প্রনয়ণ করে। কিন্তু অদ্যাবধি পর্যন্ত এই বিদ্যালয়গুলোর কোন সুরাহা করতে পারেনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। সারাদেশে এরকম ১৭৭২টি অটিষ্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় রয়েছে। এই সব বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছে প্রায় ৫১৭১২জন শিক্ষক কর্মচারী। যার এক অংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। সারা দেশে অটিষ্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে প্রায় ৪৭ লক্ষ। এই বিশাল সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠির শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন করণের জন্য এই বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬% প্রতিবন্ধী। এই সুবিশাল জনগোষ্ঠিকে শিক্ষার আলো হতে বঞ্চিত রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। এই প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রনয়ণ করে সরকার। উক্ত আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার কথা সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ অবধি আমাদের বিদ্যালয়গুলোর কোন সুরাহা হয়নি। আমাদের মা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে “মাদার অব হিউম্যানিটি” নামে পরিচিত। তাঁর কন্যা ড. সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সারা বিশ্বে অটিজম নিয়ে কাজ করছেন এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর দেশে আমাদের প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা না খেয়ে থাকবে তা তিনি নিশ্চয়ই চান না। আমাদের মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের অবস্থা সদয় সুবিবেচনা করে বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর ব্যবস্থা করবেন এই প্রত্যাশা আমরা করি। আমরা আরো আশা করি আপনাদের জাগ্রত বিবেক প্রসূত লিখনি ধারা, আমাদের ক্ষুধার্ত আওয়াজ লক্ষ বিন্দুতে ধ্বনিত হবে এবং আমাদের বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিও করণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত ৬ (ছয়) দফা দাবি সমূহঃ
১) অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিও ঘোষণা করা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়োগের তারিখ হইতে চাকুরী নিয়মিত করণ ও বেতন-ভাতা প্রদান নিশ্চিত করণ।
২) শতভাগ বিদ্যালয়ে আধুনিক মানসম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী বান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ সুনিশ্চিত করণ। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিশেষ শিক্ষা কারীকুলাম অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করণ,
৩) একটি আধুনিক থেরাপি সেন্টার নিশ্চিত করণ ও সকল শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল সহ শিক্ষা উপকরণ প্রদান (পুস্তক, খাতা, কলম, ছাতা, স্কুল ড্রেস, জুতা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র)।
৪) প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ প্রদান সুনিশ্চিত করণ,
৫) প্রতিবন্ধী ভাতা নূন্যতম ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা নিশ্চিত করণ।
৬) শিক্ষা জীবন শেষে প্রত্যেকের আত্মনির্ভরশীল জীবন যাপনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করণ।