,


শিরোনাম:
«» ভুল তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করায় এনবিআর সদস্য কায়কোবাদের প্রতিবাদ «» অনন্যা সাহা (স্বাতী) ৩২তম জন্মদিন। «» বৈষম্যবিরোধীদের ওপর অতর্কিত হামলা, আইসিইউতে ২ ছাত্রী «» হিন্দুদের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলল ইউনুসের সরকার, বলল… «» নতুন আঙ্গিকে আরো সু-পরিসরে ব্রাদার্স ফার্নিচার লি: এর শো-রুম এখন বরিশাল «» উদ্যোক্তা হাটের ২০২৪ এওয়ার্ড প্রদান «» উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল ইসলামের অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন। «» ধর্মনিরপেক্ষতা খারিজের পক্ষে ইউনূস সরকার «» ভন্ডপীর সাঈদ আনোয়ার মোবারকী বাবুর বিরুদ্ধে মানববন্দন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। «» গাইবান্ধায় ভুয়া প্রেসক্লাব খুলে কথিত সাংবাদিকরা হেনাস্তা করছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের

নড়াইলে নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করায় বসতবাড়ি, ফসলী জমি হারিয়ে সহস্রাধিক পরিবারের মানবেতর জীবন যাপন

নড়াইলে নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করায় বসতবাড়ি, ফসলী জমি হারিয়ে সহস্রাধিক পরিবারের মানবেতর জীবন যাপন।
কাজী ইমরান, নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করায় বসতবাড়ি ও ফসলী জমি হারিয়ে নি:স্ব হওয়া সহস্রাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে ৯৯ বছরের বন্দোবস্ত নিয়ে আধাপাকা, টিনের ঘরবাড়ি বানিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করার পর গত ২০২০ সাল থেকে নবগঙ্গা নদী পুন:খনন শুরু হওয়ায় বসতবাড়ি উচ্ছেদ শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বন্দোবস্ত দলিল বিবেচনা করে ভূমির ক্ষতিপূরণ পেতে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মধুমতি-নবগঙ্গা  উপ-প্রকল্প পূর্নবাসন ও নবগঙ্গা নদী পুন:খননসহ ড্রেজিং এর মাধ্যমে পুনরুজ্জীবন ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা প্রকল্পের আওতায় লোহাগড়া উপজেলা সদর থেকে কালিয়া উপজেলার মহাজন পর্যন্ত পলি পড়ে ভরাট হওয়া সাড়ে ১৫ কিলোমিটার মৃতপ্রায় নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করা হচ্ছে।নদী খনন, নদী ড্রেজিং,নদী সংযুক্ত খাল খনন, নদীর তীর প্রতিরক্ষা, রেগুলেটর পুন:নির্মাণ, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩শ’৪২ কোটি টাকা।প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে, প্রকল্প অভ্যন্তরে অবস্থিত ১৭টি বিলের পানি নবগঙ্গা নদী দিয়ে নিস্কাশিত হবে, নদী তীরবর্তী বিভিন্ন ফসলী জমি সেচের অওতায় আসবে এবং দেশীয় মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। নদীটি পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার পর লোহাগড়া পৌরসভা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া ও কোটাকোল ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় ৪৫০টি পরিবার ১০ বছর ও ৯৯ বছরের বন্দোবস্ত নিয়ে পাকা, আধাপাকা ও টিনের ঘরবাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। সি,এস ম্যাপ অনুযায়ী নদীটি পুন:খনন শুরু করার আগে ঘরের ক্ষতিপূরণ বাবদ পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাড়ে ৪কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড লোহাগড়া পওর উপ-বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফি উল্লাহ। নদী পুন:খননের জায়গা সরকারি হওয়ায় এবং বন্দোবস্ত গ্রহীতাদের জমির ক্ষতিপূরণ দেয়ার কোন নিয়ম কিংবা বিধান না থাকায় তাদের খাসজমি বাবদ কোন ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব নয়।
১২০ নং দিঘলিয়া মৌজার বাসিন্দা সিরাজ শেখ জানান, তারা ৩০ বছর আগে ১ একর ৩৯ শতক জমি ৯৯ বছরের বন্দোবস্ত নেন। নদী পুন:খনন করায় বসতবাড়ি ও ফসলী জমি হারিয়ে পথে বসেছেন। এছাড়া বন্দোবস্ত নেয়া আলমগীর মোল্যা, রাসেল খন্দকার, এনামুল মোল্যা, আইয়ুব শেখ, ডাবু মোল্যা, মো: শাহীন আলম, মহাজন-কলাগাছি এলাকার শেখ লায়েক আলী বলেন, নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করায় আমাদের বসতবাড়ি উচ্ছেদসহ ফসলী জমি ও গাছ-গাছালি হারিয়েছে। ভুক্তভোগীরা আরো বলেন বসতবাড়ি উচ্ছেদ করতে আসলে আমারা বাধা দিলে নদী খনন কাজের ঠিকাদারেরা হুমকি ধামকিসহ নানাবিধ ভয়ভীতি দেখায়। এ বিষয়ে জানার জন্য ঠিকাদারদের সাথে মোবাইলে কল করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তারা কল রিসিভ করেনি।

চরকোটাকোল গ্রামের বাসিন্দা, বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তুহিন চৌধুরী বলেন, বন্দোবস্ত নেয়া গরীব-অসহায় মানুষের জমির ক্ষতিপূরণ না দিয়ে নবগঙ্গা নদী পুন:খনন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুরাহা না পেয়ে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ উচ্চ আদালতে মামলাও করেছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ চাই।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজগর আলী বলেন, নদীর খাসজমি সরকারি সম্পত্তি। সরকারি সম্পত্তি অধিগ্রহণের কোন আইনগত সুযোগ নেই। মামলার আদেশে কোন নির্দেশনা থাকলে তা অবশ্যই পালন করা হবে। নদী পুন:খননের পর এখানে বসবাসরত যাদের জায়গা জমি কিছুই নেই, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জমি ও ঘর প্রদান করা হবে।

Share Button
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।
ঘোষনাঃ