নেত্রকোনা থেকে মাসুদুল করিম মাসুদঃ সরকারি চিঠি জালিয়াতি করে নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় স্কুলটির শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুল রহমানকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক চিঠি জালিয়াতি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।
জানা যায়, গত ১০ জুলাই ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড জেএসসি পরীক্ষা ২০১৭ এর ফি আদায় সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তিতে জেএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০ টাকা, কেন্দ্র ফি ১৫০ টাকা, বিলম্ব ফি ২৫ টাকাসহ মোট ২৭৫ টাকা ধার্য করে দেয়া হয়।
তবে দক্ষিণ বিশিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুল ইসলাম সরকারি নির্দেশনার এ চিঠি জালিয়াতি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা জানান, ২০১৭ সালের জেএসসি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক নিজেই কম্পিউটার কম্পোজ করে ১০০ টাকার পরির্বতে ৬০০ টাকা বসিয়ে নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি তৈরি করেন। এর ভিত্তিতে প্রথমে এক হাজার টাকা করে ও পরে ৮০০ টাকা করে ছাত্রছাত্রীদের থেকে ফরম পূরণ বাবদ আদায় করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ম্যানিজিং কমিটির এক সদস্য জানান, মিটিংয়ে এক হাজার টাকা করে ফি ধরার প্রস্তাব করা হলে আমরা সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখতে চাই। তবে প্রধান শিক্ষক তা দেখাতে ব্যর্থ হন। তাতে আমরা মিটিং স্থগিত করে চলে আসি। পরে তিনি নিজেই বিজ্ঞপ্তি জালিয়াতি করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ওই বাড়তি টাকা নিচ্ছেন।
অভিভাবক আব্দুল কাদির জানান, প্রধান শিক্ষক নির্ধারিত অতিরিক্ত টাকা দিয়েই ফরম পূরণ করা হয়েছে। তবে অনেক গরীব-অসহায় শিক্ষার্থী এ অতিরিক্ত অর্থ দিতে না পারায় ফরম পূরণ করতে পারছে না।
স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদুল করিম মাসুদ জানান, প্রধান শিক্ষকের এমন জালিয়াতির ঘটনা নতুন কিছু নয়। এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছুদিন পর পর বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। স্কুলটির সুনাম ধরে রাখতে এ সময় তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুল ইসলাম জানান, অভিযোগ সঠিক নয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বোর্ড নির্ধারিত ফির সঙ্গে অগ্রিম বেতন, মডেল টেস্ট ফি, অনলাইন ও যাতায়াত খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে।
পরে বিজ্ঞপ্তি জালিয়াতি ও রশিদ ছাড়া টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
উল্লেখ্য, দক্ষিন বিশিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্বে কিছুদিন আগে সরকারি বই অন্য স্কুলে বিক্রির অভিযোগও উঠেছিল।