ঝালকাঠির রাজাপুরে ইভটিজিং এর শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
মাছুম বিল্লাহ ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে ইভটিজিং এর শিকার হয়ে লোকলজ্জায় কেয়া আক্তার (১৫) নামে ৯ম শ্রেনীতে পড়ু–য়া এক মাদ্রাসা ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়া এলাকায় কেয়ার ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেয়া আক্তার ঐ এলাকায় মজিদ খানের মেয়ে এবং স্থানীয় চল্লিশ কাহনিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। কেয়ার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানায় , মঙ্গলবার (১৩জুন) বিকেলে কেয়া আক্তারকে ঘরে রেখে তার মা ও ছোটো বোন মোবাইল থেকে টাকা উত্তোলন করতে স্থানীয় বাজারে যায়। কেয়ার মা ও ছোটো বোন বাজার থেকে বাড়ীতে ফিরে ঘরের উভয় পাশের দড়জা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে কেয়াকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের দড়জা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে পাটাতনের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে ঝুলে থাকা অবস্থায় দেখতে পায় তার মা নাসিমা বেগম। পরে সে কেয়ার ঝুলন্ত দেহ নিচে নামিয়ে আনে।
নিহতের মা নাসিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন , গত দুই দিন আগে (রোববার) আমার মেয়ে উত্তমপুর বাজার থেকে তার মাদ্রাসায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য ছবি তুলে তার চাচাতো বোনের সাথে চল্লিশ কাহনিয়া নদীর পাড়ের রাস্তা ধরে বাড়ীতে ফিরছিলো। পথিমধ্যে পার্শবর্তী মোল্লা বাড়ীর মিজান মোল্লা আমার মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করে এবং দীর্ঘসময় দাড় করিয়ে রেখে বিভিন্ন রকমের ইভটিজিং এর দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। মিজান মোল্লা একই এলাকার খলিল মোল্লার ছেলে। এর পর থেকেই কেয়ার মানুষিক অবস্থা খারাপ ছিলো। ইভটিজিং এর শিকার হওয়ায় কেয়াকে নানা মানুষের নানা সমালোচনার মূখে পড়তে হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার মাদ্রাসায় পরিক্ষা দিতে গিয়েও সে সহপাঠিদের হাসিহাট্রার শিকার হয়। সেই কারনেই হয়তো লজ্জায় আমার মেয়ে কেয়া আত্মহত্যা করেছে। এলাকার সচেতন মহল, নিহতের স্বজনরা সহ তার সহপাঠিরা প্রশাসনের প্রতি এই ঘটনার সঠিক তদন্তকরে দোষীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানায় , কেয়া নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে প্রেরণ করা হবে। এ ঘটনায় রাজাপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে (যার নং -১৩)