গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ:
ধামাচাপার চেস্টা,অবশেষে মামলা দায়ের:
মোহন সরকার:গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি।
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর কুটিপাড়া গ্রামে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়টাকে ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা ধর্ষকের পরিবারের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের।অবশেষে সাংবাদিকূের সহযোগীতায় দূইদিন পরে সাদুল্লাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগে জানা যায় যে,কুটিপাড়া গ্রামের লাল মিয়া ও নার্গিস আক্তারের প্রতিবন্ধী শিশু কন্যাকে তার মায়ের কাছে রেখে তারা ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করে। নার্গিসের বিধবা মা তার প্রতিবন্ধী শিশু নাতনিকে নিয়ে বাড়িতে বাস করছিল। শিশুটিকে পাশ্ববর্তী একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশি আসাদুল ইসলামের ছেলে রাকিব হোসেন দিনের বেলায় তার ব্যাবহৃত একটি বাইসাইকেল নার্গিসের বিধবা মা’র বাড়িতে রেখে যায়। রাকিব সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই বাড়িতে সাইকেল নিতে এসে প্রতিবন্ধী শিশুটিকে ঘরের ভেতরে শুয়ে থাকতে দেখে। এসময় প্রতিবন্ধী শিশুর নানী রান্না ঘরে রাতের রান্না করতে থাকলেও তাকে দেখতে না পেয়ে রাকিব হোসেন ঘরের ভেতরে ঢুকে প্রতিবন্ধী শিশুটির মুখ চিপে ধরে ধর্ষণ করে। এ সময় প্রতিবন্ধী শিশুর নানী তেলের বোতল আনার জন্য ঘরের দরজার সামনে আসতেই শিশুটি ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে এবং নানী ঘরের মধ্যে ঢুকতেই রাকিব হোসেন তাকে ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
নানী-নাতনীর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই প্রতিবন্ধী শিশুর মা-বাবাকে খবর দিলে তারা সকালে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। শিশুটির মা নার্গিস লোকজন নিয়ে আসাদুলের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলে রাকিব কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনার বিষয়ে জানালে তারা নার্গিসের উপর মারমুখী হয়ে উঠে এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো কিছু করলে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। নার্গিস আক্তার নিরুপায় হয়ে আরেক প্রতিবেশী ও ভাতগ্রাম ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলামের স্মরণাপন্ন হলে ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ধর্ষিতার চিকিৎসার কথা বলে গাইবান্ধা হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছু ঔষধ নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।
ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে নিজেরাই বসে মিমাংসা করে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণের আলামত নষ্টের উদ্দেশ্যে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসলে তারা গত ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়। সেখানে তারা উল্লেখিত ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের কূটকৌশল উপলব্ধি করতে পেরে সাংবাদিকদের সহযোগীতায় ওইদিন ভ্যান যোগে সাদুলাপুর থানায় নিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্মরণাপন্ন হলে সেই রাতেই ধর্ষন মামলা দায়ের করা হয় (যাহার নাম্বার-৭/৯-৯-২০২৩ ইং)।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা মেয়েটাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে এসেছি। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি,আজকে রাতে বসার কথা আছে। ধর্ষণের ঘটনায় থানায় না নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কারণ কি? তিনি এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে ভাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মাফুর মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই বলেন, আপনারা মেয়েটিকে নিয়ে কেন থানায় গিয়েছেন ? বলে মোবাইল কেটে দেন। এরপর আবারো কথা বলার জন্যে তার মোবাইলে কল দিলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি!
এলাকার সচেতন মহল এবং ভুক্তভোগী পরিবার ধর্ষক রাকিবসহ নজরুল ইসলাম মেম্বার ও চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মাফুর বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
এ ধরনের আরো সংবাদ





